টি.এম.মুনছুর হেলাল, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারেন সারা দেশের মত শাহজাদপুর উপজেলায়ও করোনা কালীন লকডাউনের কারনে মানবেতর জীবনযাপন করছে শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় শতাধিক বাঁশ ও বেত শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট কারিগররা। সংসারের অভাব অনটন, ছেলে মেয়ের লেখা পড়া চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রতিনিয়ত হিমসিম খাচ্ছে তারা। লকডাউন কিছুটা শিথিলতার কারণে আবারও ব্যবসা বানিজ্য করে সাবলম্বি হতে চায় ,ঘুচাতে চায় সংসারের অভাব অনটন। করোনায় লকডাউনের সময় নিজেদের গচ্ছিত সহায় সম্বল টুকু শেষ করে আবারও নিজের পায়ে দাড়াতে চায়। লকডাউন শিথিলতা কারনে আবারও সচল হয়ে পড়েছে বাঁশ ও বেত শিল্প পাড়ার ছেলে – বুড়ো থেকে শুরু গৃহিণীরা পর্যন্ত। সবাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বাঁশ ও বেতের সাংসারিক কাজের জন্য বিভিন্ন রকম জিনিস পত্র তৈরিতে। শাহজাদপুর পৌর এলাকার পাঠানপাড়া ( রায় পাড়া) ছাড়াও অত্র উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায় বাঁশ ও বেত শিল্প পরিবার। যারা এখনো বাব- দাদার প্রাচীন পেশাকে অবলম্বন করে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করেন। শাহজাদপুর পৌর এলাকার রায়পাড়া( পাঠানপাড়া) সরজমিনে গিয়ে জানা যায় পুরানো দিনের অনেক অজানা কথা।
এক সময়ে এই পাঠানপাড়ায় ব্যাপক হারে তৈরি হতো বাঁশ ও বেতের শহর ও গ্রামীণ মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সহ নানামুখী দৈনন্দিন কাজের জন্য বিভিন্ন রকম জিনিস পত্র। কালের বিবর্তনে আর কাঁচা মালের সহজ প্রাপ্যতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকতে না পারায় থেমে গেছে এ শিল্পের গতি। কমে গেছে এ পেশায় থাকা মানুষের সংখ্যাও। কিন্তু সবক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোয়া লাগলেও এখনও সমান খ্যাতি- যশ বহন করে চলছে এই শিল্পটা। এই পেশার মানুষের আগের তুলনায় আয় রোজগার কমে গেছে ঠিকই, তবে কমেনি তাদের নিপুন হাতের তৈরি জিনিষের জৌলুস ও চাহিদা। বাঁশ জাত পন্য তৈরি সম্পর্কে কিছু জানতে চাইলে বিশুপাটনী বলেন বাঁশ কিনে এনে ফেলে রাখা যায় না,যেন শুকিয়ে না যায় তার জন্য বাঁশ পানিতে বেশ কিছু দিন ভিজিয়ে রাখতে হয়।এক সময় ভিজে নরম হলে বাঁশ টুকরো- টুকরো করে ( বেতি বা পাতলা করে কেটে)রোদে শুকানো হয়।
পরে তা দিয়ে বিভিন্ন ধরনের পন্য তৈরি করা হয়। যেমন কুলা- চালুন,ঝাঁকা,টুপরি,হাস- মুরগী পালনের ঝুপড়ি, মাঝ ধরার জন্য আরও অনেক কিছু। তিনি আরও বলেন এই পেশার সাথে জড়িত একেকটি পরিবার এই কাজ করে অতিসহজেই প্রতি মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করতে সক্ষম। রাখাল নামে আর এক শিল্পী বলেন যদি কেউ প্রতিদিন ভালো ভাবে কাজ করে তবে এর চাইতেও বেশি উপার্জন করা সম্ভব। তবে কালের বিবর্তনে,পর্যাপ্ত কাচামাল ও সহায়তায় অভাবে এ পেশার সাথে জড়িত অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন এই যুবক। তাই এ পেশাকে ধরে রাখতে হলে এবং অতীত ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে চাই সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা, চাই পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁচা মালের সুলভ মূল্যে সরবারহ।